All-Herbs Treatment

ডায়াবেটিস এর কারণ ও নিয়ন্ত্রণের উপায় এবং ১০ টি ঘরোয়া সমাধান

ডায়াবেটিস এর কারণ ও প্রতিকার

ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে ডায়াবেটিস এর কারন জানা প্রয়োজন। ডায়াবেটিসের কারন জানতে পারলে এর নিয়ন্ত্রণ অনেক সহজ। এই ব্লগে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ১০ টি ঘরোয়া সমাধান জানবো।

ডায়াবেটিস হলো এমন একটি রোগ যেখানে রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে।  মূলত দুই ধরনের ডায়াবেটিস দেখা যায়— টাইপ ১ ও টাইপ ২। টাইপ ১ সাধারণত ছোটবেলায় দেখা যায়, আর টাইপ ২ বেশি পরিণত বয়সে হয়, যা অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার কারণে হতে পারে।

ডায়াবেটিস হলে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন, শরীরে অতিরিক্ত ক্লান্তি, তৃষ্ণা, ক্ষুধা বৃদ্ধি, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা এবং ক্ষত শুকাতে দেরি হওয়া। দীর্ঘমেয়াদে এটি হার্ট, কিডনি ও স্নায়ুতন্ত্রের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে।

এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে নিয়মিত ব্যায়াম, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ বা ইনসুলিন নিতে হতে পারে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো সঠিক জীবনযাপন অনুসরণ করা। স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়িয়ে এবং নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করে এই রোগ সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

ডায়াবেটিস এর কারণ ও নিয়ন্ত্রণের উপায়

ডায়াবেটিস একটি জটিল ও দীর্ঘমেয়াদী রোগ, যা মূলত রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে হয়। এটি সাধারণত ইনসুলিন হরমোনের ঘাটতি বা ইনসুলিন ঠিকমতো কাজ না করার ফলে দেখা দেয়। অনেকেই মনে করেন, শুধু মিষ্টি খাওয়ার কারণে ডায়াবেটিস হয়, কিন্তু আসলে এর পিছনে আরও অনেক কারণ কাজ করে।

ডায়াবেটিসের কারণ

  • বংশগত কারণ:যদি পরিবারের কারও ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। বিশেষ করে বাবা-মা বা নিকট আত্মীয়ের মধ্যে কারও থাকলে সতর্ক থাকা জরুরি।
  • খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রা:অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার ও উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণের ফলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। শারীরিক পরিশ্রমের অভাবও একটি বড় কারণ।
  • ওজন বৃদ্ধি:স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন শরীরে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স তৈরি করে, যার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যায়।
  • হরমোনজনিত সমস্যা:পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS) ও কিছু হরমোনজনিত সমস্যাও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • মানসিক চাপ ও ঘুমের সমস্যা:অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও অনিয়ন্ত্রিত ঘুম ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে, যা ধীরে ধীরে ডায়াবেটিসের দিকে ঠেলে দেয়।

নিয়ন্ত্রণের উপায়

ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে ডায়াবেটিস এর কারণ জানা প্রয়োজন। ডায়াবেটিসের কারণ জানা গেলে এর নিয়ন্ত্রণ অনেক সহজ।

  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন এবং সক্রিয় জীবনযাপন করুন।
  • পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার খান, বিশেষ করে শাকসবজি ও উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার।
  • অতিরিক্ত ওজন এড়িয়ে চলুন।
  • মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন।
  • সচেতনতা ও নিয়ম মেনে চললে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই সুস্থ থাকতে এখন থেকেই সতর্ক হোন!
ডায়া-টি। ডায়াবেটিস চা। ডায়াবেটিসের তিতা মুক্ত সমাধান।

চা খেয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে উপরের ছবিতে ক্লিক করে অর্ডার করুন।

ডায়াবেটিস হলে কী কী সমস্যা হয়?

ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে ডায়াবেটিস এর কারণ জানা প্রয়োজন। ডায়াবেটিসের কারণ জানা গেলে এর নিয়ন্ত্রণ অনেক সহজ। ডায়াবেটিস হলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এটি শুধু রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় না, বরং দীর্ঘমেয়াদে শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করে। নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ডায়াবেটিস প্রাণঘাতী জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

  • শরীরের সাধারণ সমস্যা অতিরিক্ত তৃষ্ণা ও ঘন ঘন প্রস্রাব – রক্তে অতিরিক্ত শর্করা জমে থাকলে শরীর স্বাভাবিক ভারসাম্য রক্ষা করতে পানি বেশি চায়, ফলে তৃষ্ণা বাড়ে এবং বারবার প্রস্রাব হয়।
  • দৃষ্টিশক্তির সমস্যা – ডায়াবেটিস চোখের রক্তনালীকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যার ফলে ঝাপসা দেখা, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া এমনকি অন্ধত্বের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • অবসাদ ও ক্লান্তি – ইনসুলিন ঠিকভাবে কাজ না করলে শরীর পর্যাপ্ত শক্তি পায় না, ফলে সবসময় ক্লান্ত লাগে।

দীর্ঘমেয়াদী জটিলতা

  • হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ – অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ধমনিতে চর্বি জমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • কিডনি সমস্যা – দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস থাকলে কিডনি ঠিকমতো কাজ করতে পারে না, যা ধীরে ধীরে কিডনি ফেইলিউরের দিকে নিয়ে যায়।
  • পায়ের ক্ষত ও ইনফেকশন – রক্তপ্রবাহ কমে যাওয়া ও স্নায়ুর ক্ষতির কারণে পায়ের ছোটখাটো ক্ষত সহজে শুকায় না, কখনও কখনও পা কেটে ফেলতেও হতে পারে।
  • স্নায়ু ক্ষতি (নিউরোপ্যাথি) – হাত-পা ঝিনঝিন করা, ব্যথা বা অসাড় লাগা ডায়াবেটিসের অন্যতম জটিলতা।
ডায়াবেটিস এর কারণ ও প্রতিকার

ডায়াবেটিস এর কারণ ও প্রতিকার

ডায়াবেটিস কমানোর ঘরোয়া উপায়

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই জরুরি, ডায়াবেটিস এর কারণ এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। ওষুধের পাশাপাশি কিছু ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করলে রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব।

খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করুন

  • তুলসী ও মেথি বীজ – প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস পানিতে মেথি ভিজিয়ে রেখে সেই পানি পান করলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমতে পারে। তুলসী পাতাও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
  • আমলকি ও করলা রস – আমলকি শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায় এবং করলা রস রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। সকালে খালি পেটে এটি খেলে উপকার পাওয়া যায়।
  • শাকসবজি ও আঁশযুক্ত খাবার – পালং শাক, ঢেঁড়স, ব্রকলি ও অন্যান্য আঁশযুক্ত খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়তে দেয়, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • ডায়া-ভেষ অথবা ডায়া-টি সেবন— ন্যাচারাল ভেষজ দিয়ে তৈরি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত সমাধান ডায়া-ভেষ অথবা ডায়া-টি সেবন করতে পারেন। এটি আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। ১৫-২০ দিনের মধ্যে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসা শুরু করবে ইনশাআল্লাহ।
  • মরিঙ্গা পাউডার বা সজনে পাতা গুঁড়া সেবন— কিছু গবেষণায় দেখা যায় সজনে পাতার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। কয়েকজনের সাথে কথা বলে এটা আমি নিজেই প্রমান পেয়েছি। সজনে পাতা পেতে সমস্যা হলে মরিঙ্গা পাউডার বা সজনে পাতা গুঁড়া সংগ্রহ করে সেবন করতে পারেন

 নিয়মিত ব্যায়াম করুন

প্রতিদিন ৩০-৪৫ মিনিট হাঁটা, যোগব্যায়াম বা হালকা ব্যায়াম করলে ইনসুলিন ভালোভাবে কাজ করতে পারে এবং গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রিত থাকে।

  •  পর্যাপ্ত পানি পান করুন  শরীরের অতিরিক্ত শর্করা প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করতে দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা জরুরি।
  • স্ট্রেস কমান ও পর্যাপ্ত ঘুমান অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও অনিয়মিত ঘুম ডায়াবেটিসের অন্যতম কারণ হতে পারে। পর্যাপ্ত ঘুম ও রিলাক্সেশন টেকনিক মেনে চললে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়।

এই ঘরোয়া উপায়গুলো অনুসরণ করলে রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব। তবে নিয়মিত পরীক্ষা করা ও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা

ডায়াবেটিস বর্তমানে বিশ্বব্যাপী অন্যতম বড় স্বাস্থ্য সমস্যা। ডায়াবেটিস এর কারণ  এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ, যা শরীরের ইনসুলিন উৎপাদন ও ব্যবহার ক্ষমতার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। ডায়াবেটিস রোগীদের এমন খাবার খেতে হবে, যা ধীরে ধীরে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়ক হয়। তাই নিয়মতান্ত্রিক ও সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি।

ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্যাভ্যাস কেমন হওয়া উচিত?

ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্যতালিকা নির্ধারণের সময় নিচের বিষয়গুলো মাথায় রাখা উচিত—

  • কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত খাবার খেতে হবে, যাতে রক্তে শর্করার পরিমাণ ধীরে বাড়ে।
  • প্রোটিন ও ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে হবে, যা দীর্ঘক্ষণ ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
  • চিনি ও প্রসেসড খাবার এড়িয়ে চলতে হবে, কারণ এগুলো দ্রুত রক্তে শর্করা বাড়িয়ে দেয়।
  • নিয়মিত খাবারের সময় মেনে চলা জরুরি, যাতে শরীরের ইনসুলিন ব্যবস্থাপনা স্বাভাবিক থাকে।
  • পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে, যা শরীরের বিপাকক্রিয়াকে সক্রিয় রাখবে।

সকালের নাশতা

সকালের নাশতা অবশ্যই স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর হওয়া উচিত, যাতে দীর্ঘক্ষণ শক্তি পাওয়া যায় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল থাকে।

  • ওটস ও চিয়া সিড: ওটস ধীরে হজম হয়, যা রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরে বাড়তে সাহায্য করে। চিয়া সিড ফাইবারসমৃদ্ধ, যা পেট ভরা রাখে।
  • ডিম ও শাকসবজি: সিদ্ধ বা ভাজা ডিমের সঙ্গে পালং শাক, ব্রকলি, গাজর, ফুলকপি ইত্যাদি খেলে পুষ্টির ভারসাম্য বজায় থাকে।
  • গমের রুটি ও ডাল: আটার রুটি ও মসুর বা মুগ ডাল খেলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে এবং ইনসুলিন কার্যকারিতা বাড়ে।
  • আমলকি ও করলা রস: আমলকি শরীরের ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায় এবং করলা রস রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

দুপুরের খাবার

দুপুরের খাবার হতে হবে পরিমিত এবং স্বাস্থ্যকর। অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।

  • বাদামি চালের ভাত বা আটার রুটি: সাদা চালের ভাতের পরিবর্তে বাদামি চাল বা আটার রুটি খাওয়া ভালো, কারণ এটি ধীরে হজম হয় ও শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • সবজি ও সালাদ: করলা, ঢেঁড়স, বাঁধাকপি, ব্রকলি, মিষ্টিকুমড়া, গাজর, শসা ইত্যাদি শাকসবজি ও সালাদ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর।
  • মাছ ও মাংস: কম চর্বিযুক্ত মাছ (রুই, কাতলা) ও চামড়া ছাড়া মুরগির মাংস প্রোটিনের ভালো উৎস। তবে ভাজা খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
  • ডাল: ডাল প্রোটিন ও ফাইবারসমৃদ্ধ, যা দীর্ঘক্ষণ ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
  • টক দই: খাবারের পরে এক কাপ টক দই খেলে হজম ভালো হয় ও অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া সক্রিয় থাকে।
ডায়াবেটিস এর কারণ ও প্রতিকার

ডায়াবেটিস এর কারণ ও প্রতিকার

বিকেলের নাশতা

বিকেলের নাশতা এমন কিছু হওয়া উচিত, যা অতিরিক্ত ক্ষুধা দূর করবে কিন্তু রক্তে শর্করা বাড়াবে না।

  • অঙ্কুরিত ছোলা ও মুগ: এটি উচ্চ ফাইবার ও প্রোটিনসমৃদ্ধ, যা দীর্ঘক্ষণ ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • গ্রিন টি বা দারুচিনি চা: ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • বাদাম ও বীজ: কাজু বাদাম, আখরোট, চিয়া সিড, তোকমা সিড শরীরের সুগার ব্যালেন্স করতে সাহায্য করে।
  • ফলের টুকরো: আপেল, কমলা, পেয়ারা, বেরি জাতীয় ফল কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

রাতের খাবার

রাতের খাবার সহজপাচ্য ও হালকা হওয়া উচিত, যাতে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হজম ভালো হয়।

  • হালকা ও সহজপাচ্য খাবার: আটার রুটি, গ্রিলড মাছ, সবজি স্টু, বা সেদ্ধ ডাল খাবার ভালো বিকল্প।
  • সবজি ও শাক: লাউ, ঢেঁড়স, পালং শাক, পুঁইশাক, বাঁধাকপি এবং অন্যান্য সবজি অন্ত্রে গ্লুকোজ শোষণ কমিয়ে দেয়।
  • সুপ: হালকা সবজি সুপ বা মুগডালের সুপ রাতের খাবারের জন্য আদর্শ, কারণ এটি ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে।

কোন খাবার এড়িয়ে চলা উচিত?

ডায়াবেটিস রোগীদের কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত, যা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দিতে পারে।

  • সাদা চাল ও ময়দার খাবার: ব্রেড, পরোটা, পাস্তা ইত্যাদি এড়িয়ে চলুন।
  • চিনি ও মিষ্টিজাতীয় খাবার: মিষ্টি, সফট ড্রিংকস, কেক, বিস্কুট ইত্যাদি এড়িয়ে চলা উচিত।
  • অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার: ডিপ ফ্রাইড খাবার যেমন সিঙ্গারা, সমোसा, পুরি এড়িয়ে চলুন।
  • ফাস্টফুড ও প্রসেসড ফুড: বার্গার, পিজ্জা, প্যাকেটজাত খাবার খেলে দ্রুত রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়।
পরামর্শ ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন, বিশেষ করে হাঁটা ও যোগব্যায়াম রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • পর্যাপ্ত পানি পান করুন, যাতে শরীরের বিপাকক্রিয়া ঠিক থাকে।
  • পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন এবং মানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন।
  • খাবার গ্রহণের নির্দিষ্ট রুটিন অনুসরণ করুন।

সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। ডায়াবেটিস এর কারণ তাই পরিকল্পিত খাদ্য তালিকা মেনে চলুন এবং সুস্থ থাকুন!

  • ডায়াবেটিস রোগী শুকিয়ে যাওয়ার প্রধান কারণ
  • ইনসুলিনের ঘাটতি ও গ্লুকোজের ব্যবহার কমে যাওয়া
  • ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে ইনসুলিনের অভাব হলে, খাবার থেকে প্রাপ্ত গ্লুকোজ কোষে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে শরীর প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপন্ন করতে পারে না এবং ফ্যাট ও পেশি ভেঙে শক্তি তৈরি করে, যার ফলে ওজন কমে যায়।

অতিরিক্ত প্রস্রাব হওয়া (পলিউরিয়া)

ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে শরীর বেশি পরিমাণে প্রস্রাবের মাধ্যমে গ্লুকোজ বের করে দিতে থাকে। ডায়াবেটিস এর কারণ এতে শরীর পানিশূন্য হয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে ওজন কমতে থাকে।

  • মেটাবলিজমের পরিবর্তন ডায়াবেটিস শরীরের বিপাকক্রিয়াকে দ্রুত পরিবর্তন করে, যার ফলে শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি শোষণ করতে পারে না। এই কারণে রোগী দুর্বল হয়ে পড়ে ও শুকিয়ে যেতে থাকে।
  • ক্ষুধা বৃদ্ধি ও পুষ্টির অভাব অনেক ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষুধা বেড়ে যায়, কিন্তু শরীর যথাযথ পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে না। ডায়াবেটিস এর কারণ ফলে শরীর ক্রমাগত শক্তি হারায় এবং শুকিয়ে যেতে থাকে।

সমাধান ও প্রতিকার

  • সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন, যাতে পর্যাপ্ত প্রোটিন ও ফাইবার থাকে।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন, যা পেশির ক্ষয় প্রতিরোধ করতে সহায়ক।
  • পর্যাপ্ত পানি পান করুন, যাতে শরীর পানিশূন্য না হয়।
  • চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইনসুলিন বা ওষুধ গ্রহণ করুন।

সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ করলে ডায়াবেটিস রোগীদের শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

উপসংহার

ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে ডায়াবেটিস এর কারণ জানা প্রয়োজন। ডায়াবেটিসের কারণ জানা গেলে এর নিয়ন্ত্রণ অনেক সহজ। ডায়াবেটিস হলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটি নিয়ন্ত্রণে রাখলে স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্ভব। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন মেনে চললে ডায়াবেটিস থেকে সুরক্ষিত থাকা যায়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *